নভোমন্ডল ও
ভূমন্ডলের সৃষ্টি, দিন ও রাত্রির আগমন-নির্গমন এবং সারা বছরের ঋতু
বৈচিত্র্য সবই আল্লাহর নিদর্শন সমূহের অন্তর্ভুক্ত। এতে বান্দার কোন হাত
নেই। তাই সৃষ্টির বদলে স্রষ্টার ইবাদত করাই বান্দার প্রধান কর্তব্য। হাদীছে
কুদসীতে আল্লাহ বলেন, ‘আদম সন্তান আমাকে কষ্ট দেয়। সে যামানাকে গালি দেয়,
অথচ আমিই যামানার সৃষ্টিকর্তা। আমার হাতেই সকল কর্তৃত্ব। আমি রাত্রি ও
দিবসের বিবর্তন ঘটাই’ (বুঃ মুঃ মিশকাত হা/২২)। তাই বর্ষবরণ,
বর্ষাবরণ, চৈত্রসংক্রান্তি ইত্যাদি অনুষ্ঠান সমূহ ইসলামী আক্বীদার সম্পূর্ণ
বিরোধী। কারণ এগুলিতে স্রষ্টাকে বাদ দিয়ে সৃষ্টিকে পূজা করা হয়। যা স্পষ্ট
শিরক।
যুগ যুগ ধরে এদেশে হিন্দু-মুসলিম একত্রে সহাবস্থান করছে। প্রত্যেকেই স্ব স্ব উৎসব-আনন্দ করে থাকে। হিন্দুদের বারো মাসে তের পার্বণ হয়ে থাকে। মুসলমানদের দুই ঈদে আনন্দ-উৎসব হয়ে থাকে। কেউ কারো ধর্মীয় উৎসবকে নিজেদের বলে দাবী করেনি। বরং প্রত্যেকেই প্রত্যেকের প্রতি সহানুভূতিশীল থেকে পৃথকভাবে স্ব স্ব ধর্মীয় ও অন্যান্য অনুষ্ঠান সমূহ পালন করে থাকে। কিন্তু সম্প্রতি ‘ধর্মনিরপেক্ষতা’র নামে হিন্দুদের পালিত নানা পর্ব ও উৎসবকে ‘সার্বজনীন জাতীয় উৎসব’ হিসাবে দাবী করা হচ্ছে এবং তাতে মুসলমানদের অংশগ্রহণের জন্য প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে বাধ্য করার প্রবণতা দেখা যাচ্ছে। যা নিতান্তই অন্যায়। বরং এর ফলে উভয় সম্প্রদায়ের মধ্যে দূরত্ব বৃদ্ধি পাচ্ছে। যা ইতিপূর্বে কখনো ছিল না। দুর্বল চেতনার মুসলমানরা ক্রমেই অমুসলিমদের বিভিন্ন শিরকী কর্মকান্ডে জড়িয়ে পড়ছে। এ থেকে ভবিষ্যৎ বংশধরগণকে রক্ষা করা আমাদের অপরিহার্য দায়িত্ব।
হিন্দুদের পালিত বিভিন্ন উৎসবের মধ্যে ‘বর্ষবরণ’ অন্যতম একটি ধর্মীয় উৎসব। অত্র বিষয়ে লেখিকা শরীফা খাতুন-এর নিবন্ধটি মাসিক ‘আত-তাহরীক’ ১৮তম বর্ষ ৩য় সংখ্যা, ডিসেম্বর’১৪-এর ‘মহিলাদের পাতা’য় প্রকাশিত হয়। লেখাটি ‘গবেষণা বিভাগ’ কর্তৃক সম্পাদিত ও পরিমার্জিত হয়েছে। লেখাটির জন্য সম্মানিতা লেখিকা আমাদের কৃতজ্ঞতাভাজন হয়েছেন। বইটি বিদগ্ধ পাঠকবৃন্দের নিকট গ্রহণযোগ্যতা পাবে বলে আমাদের একান্ত বিশ্বাস।
এ বইয়ের মাধ্যমে মুসলিম সমাজে শিরকের প্রতি ঘৃণা ও তাওহীদের প্রতি ভালবাসা সৃষ্টি হৌক এটাই আমাদের একান্ত কামনা। আল্লাহ আমাদের এই ক্ষুদ্র প্রচেষ্টা কবুল করুন। ‘হাদীছ ফাউন্ডেশন’-এর গবেষণা বিভাগ ও প্রকাশনার সাথে জড়িত সকলকে আল্লাহ ইহকালে ও পরকালে উত্তম জাযা দান করুন- আমীন!