home

call

email

২য় সংস্করণের ভূমিকা

بسم الله الرحمن الرحيم

الحمد لله وحده والصلاة والسلام على من لا نبيّ بعده وعلى آله وصحبه ومن تبعهم بإحسان إلي يوم الدين وبعد :

২য় সংস্করণের ভূমিকা

(مقدمة المؤلف للطبعة الثانية)  

‘ইক্বামতে দ্বীন’ অর্থ ইক্বামতে তাওহীদ। অর্থাৎ মুমিনের সার্বিক জীবনে এক আল্লাহর দাসত্ব কায়েম করা। যা দু’ভাবে হয়ে থাকে। ১. আল্লাহর আদেশ-নিষেধ ও বিধি-বিধান সমূহের যথাযথ অনুসরণ ও বাস্তবায়নের মাধ্যমে। ২. আল্লাহ বিরোধী সকল প্রকার জাহেলিয়াতের বিরুদ্ধে আপোষহীন থাকার মাধ্যমে। আমর বিল মা‘রূফ ও নাহি ‘আনিল মুনকার তথা ন্যায়ের আদেশ ও অন্যায়ের নিষেধ যার সার্বক্ষণিক নীতি হিসাবে অনুসৃত হয় (আলে ইমরান ৩/১১০)। যোগ্য আমীরের অধীনে নিবেদিতপ্রাণ একদল কর্মীর জামা‘আতবদ্ধ প্রচেষ্টার মাধ্যমে যা সমাজে প্রতিষ্ঠা লাভ করে (নিসা ৪/৫৯; ছফ ৬১/৪)। এভাবেই আল্লাহ মুসলিম উম্মাহকে মানব জাতির উপরে সাক্ষ্যদাতা ‘মধ্যপন্থী উম্মত’ হিসাবে সম্মানিত করেছেন (বাক্বারাহ ২/১৪৩)

বিগত সকল নবী এবং শেষনবী মুহাম্মাদ (ছাঃ)-এর অনুসৃত উপরোক্ত নীতিই হ’ল দ্বীন কায়েমের সঠিক পদ্ধতি। উক্ত চিরন্তন নীতির বাইরে গিয়ে ইসলামের প্রথম যুগে চরমপন্থী খারেজী ও শী‘আ দল এবং তাদের বিপরীতে শৈথিল্যবাদী মুর্জিয়া দল ভ্রান্ত পথের সূচনা করে। পরবর্তীতে তাদেরই অনুসরণে যুগে যুগে বিভিন্ন নামে বিভিন্ন দেশে নানাবিধ দল ও উপদল সৃষ্টি হয়েছে। শেষোক্ত দলটি চরম শৈথিল্য দেখিয়ে বৈষয়িক জীবনে প্রবৃত্তি পূজারী হয়েছে এবং ইসলামকে ছেড়ে নানা বিজাতীয় কুফরী মতবাদ কবুল করেছে। অন্যদিকে চরমপন্থী দলটি দ্রুত ক্ষমতা লাভের মাধ্যমে দ্বীন কায়েমের স্বপ্ন দেখেছে এবং সেটাকেই ‘বড় ইবাদত’ মনে করেছে। বর্তমানে যার প্রাদুর্ভাব বিশ্বব্যাপী দেখা যাচ্ছে। এটি পারস্পরিক ক্রিয়া ও প্রতিক্রিয়ার কারণে হ’তে পারে। অথবা ‘ইক্বামতে দ্বীন’ সম্পর্কে অজ্ঞতা ও স্বচ্ছ ধারণার অভাবের কারণে হ’তে পারে।

ইসলামের প্রথম শতাব্দীর প্রথমার্ধ থেকেই উপরোক্ত দুই পরস্পর বিরোধী নীতির বাইরে সর্বদা মধ্যপন্থী নীতির অনুসরণ করে এসেছেন ‘আহলুল হাদীছ’ বিদ্বানগণ। তাঁরা মুসলিম উম্মাহকে সকল প্রকার ভ্রান্ত পথ ছেড়ে বিশুদ্ধ ইসলামের প্রতি আহবান জানিয়েছেন। এদেশে ‘আহলেহাদীছ আন্দোলন বাংলাদেশ’ এবং তার অঙ্গ সংগঠন ও প্রতিষ্ঠান সমূহ একই উদ্দেশ্যে নিবেদিত। তাঁরা উক্ত লক্ষ্যে জামা‘আতবদ্ধভাবে সমাজ সংস্কারের গুরু দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছেন।

আলোচ্য ‘ইক্বামতে দ্বীন : পথ ও পদ্ধতি’ বইটি মূলতঃ দু’টি নিবন্ধের সমষ্টি। প্রথমটি এদেশে জঙ্গীবাদ মাথা চাড়া দেওয়ার শুরুতে মাসিক ‘আত-তাহরীক’ ১৯৯৮ সালের (২/২) নভেম্বর সংখ্যায় এবং দ্বিতীয়টি  ২০০৩ সালের (৬/১০) জুলাই সংখ্যায় ‘দরসে কুরআন’ কলামে প্রকাশিত হয়। অতঃপর ২০০৪ সালের মার্চ মাসে দু’টি দরস মিলিতভাবে একটি বই আকারে ১ম সংস্করণ বের হয়। বর্তমান ২য় সংস্করণে যাতে খুব সামান্যই সংশোধনী এসেছে।

সন্ত্রাসবাদ ও জঙ্গীবাদের বিরুদ্ধে এই বইটিই দেশে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে যাচ্ছে। এতে বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে যে, মানুষের আক্বীদা ও আমলে ইসলামের সঠিক রূপ প্রতিষ্ঠিত না হওয়া পর্যন্ত প্রচলিত ব্যালট ও বুলেট কোন পদ্ধতিতেই সমাজে প্রকৃত ইসলাম প্রতিষ্ঠিত হওয়া সম্ভব নয়। এ বইয়ের মাধ্যমে বহু পথহারা মানুষ ইসলামের সঠিক পথের সন্ধান পেয়েছে এবং ভবিষ্যতেও পাবে ইনশাআল্লাহ

পরিশেষে আল্লাহর জন্যই সকল প্রশংসা। অতঃপর তাঁর শেষনবী মুহাম্মাদ (ছাঃ) এবং তাঁর পরিবারবর্গ ও ছাহাবীগণের প্রতি রইল অসংখ্য দরূদ ও সালাম। 

সূচীপত্র

ইক্বামতে দ্বীন : পথ ও পদ্ধতি
উপসংহার
ইক্বামতে দ্বীন : পথ ও পদ্ধতি- এক নযরে