home

call

email

প্রকাশকের নিবেদন

এক সময় মুসলিম উম্মাহ দোর্দন্ড প্রতাপে সমগ্র পৃথিবী শাসন করেছিল। শৌর্য-বীর্যে তারা ছিল খ্যাতির শীর্ষে। অতঃপর মৌলিকভাবে তিনটি কারণে মুসলমানরা পতনের দ্বারপ্রান্তে উপনীত হয়। (১) তাওহীদী আক্বীদা দুর্বলকারী বিভিন্ন অনৈসলামী দর্শনের অনুপ্রবেশ। (২) ঈমান ও আমলের মধ্যে ঐক্যতান শিথিল হওয়া। (৩) জাহেলিয়াতের সঙ্গে আপোষকামিতা। দুনিয়ার মোহে পড়ে তারা পরস্পর বিবাদ-বিসম্বাদে লিপ্ত হ’ল। ফলে মুসলিম জাতির প্রভাব-প্রতিপত্তির সুদৃঢ় দেয়ালে ফাটল সৃষ্টি হ’ল।  শত্রুরা তাদের ঘাড়ে চেপে বসে ছড়ি ঘুরাতে লাগল। লাঞ্ছনা ও দুর্গতি যেন তাদের ললাট লিখনে পরিণত হ’ল। এ অবস্থা এখনও অব্যাহত আছে। আজ পৃথিবীর সর্বত্র মুসলমানরা নির্যাতিত হচ্ছে।

যুগশ্রেষ্ঠ মুহাদ্দিছ শায়খ মুহাম্মাদ নাছিরুদ্দীন আলবানী (১৯১৪-১৯৯৯) মুসলমানদের এ দুর্দশা ও দুর্গতির হাদীছভিত্তিক কারণ অনুসন্ধানে ব্যাপৃত হন। তিনি আবূদাঊদ-এর ৩৪৬২ নং হাদীছের আলোকে মুসলমানদের পতনের দু’টি মৌলিক কারণ চিহ্নিত করেন। ১. বিভিন্ন কৌশলে সূদ সহ নানাবিধ হারাম লেনদেনে জড়িয়ে পড়া। ২. দুনিয়ার মোহে বিভোর হয়ে পরকালকে ভুলে যাওয়া। এর চিকিৎসা হ’ল التصفية (পরিশুদ্ধিতা) ও الةربية (পরিচর্যা)-এর মাধ্যমে দ্বীনের দিকে প্রত্যাবর্তন করা। শুধু কথার ফুলঝুরিতে নয়; বরং আক্বীদা ও আমলের সংশোধনের মাধ্যমে প্রকৃত অর্থে দ্বীনের দিকে ফিরে আসা। আর দ্বীনের দিকে প্রত্যাবর্তন অর্থই হল কুরআন ও ছহীহ সুন্নাহর দিকে প্রত্যাবর্তন। সুতরাং আমরা যদি আমাদের তরুণ প্রজন্মকে কুরআন ও সুন্নাহ নির্ভর ছহীহ আক্বীদার উপর গড়ে তুলতে পারি তাহ’লে মুসলিম উম্মাহ তার পতন দশা থেকে মুক্তি লাভ করে অতীতের সেই সোনালী ঐতিহ্য পুনরুদ্ধার করতে পারবে ইনশাআল্লাহ। মহান আল্লাহ বলেন, ‘নিশ্চয়ই আল্লাহ কোন জাতির অবস্থার পরিবর্তন করেন না, যতক্ষণ না তারা নিজেদের অবস্থা নিজেরা পরিবর্তন করে’ (রা‘দ ১৩/১১)

সেই কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্য সাধনের জন্য ‘হাদীছ ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ’ বইটি অনুবাদের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে এবং জনাব আব্দুল মালেক (ঝিনাইদহ)-কে সেটি অনুবাদের দায়িত্ব প্রদান করা হয়। তিনি সাবলীলভাবে বইটি অনুবাদ করে আমাদের কৃতজ্ঞতাভাজন হয়েছেন। বইটি প্রথমত মাসিক ‘আত-তাহরী’কে দুই কিস্তিতে (ডিসেম্বর’১৯-জানুয়ারী’২০) প্রকাশিত হয়। এক্ষণে এর গুরুত্ব ও আবেদন বিবেচনায় সেটি গ্রন্থাকারে প্রকাশিত হতে যাচ্ছে। বইটি ‘হাদীছ ফাউন্ডেশন’ গবেষণা বিভাগ কর্তৃক সম্পাদিত ও পরিমার্জিত হয়েছে। এটি সুখপাঠ্য হিসাবে পাঠকের কাছে গ্রহণযোগ্যতা পাবে বলে আমাদের দৃঢ় বিশ্বাস।

উক্ত গ্রন্থ পাঠের মাধ্যমে যদি একজন পাঠকের মনেও নবজাগৃতির স্পৃহা সৃষ্টি হয় এবং কুরআন ও ছহীহ সুন্নাহকে অাঁকড়ে ধরার মানসিকতা তৈরী হয় তবেই আমাদের শ্রম সার্থক হবে। আল্লাহ আমাদের এই ক্ষুদ্র প্রচেষ্টাটুকু কবুল করুন এবং এর সাথে সংশ্লিষ্ট সকলকে উত্তম জাযা প্রদান করুন- আমীন!!